আপনার শহরে যদি বর্ষা এসে যায়, তাহলে গরমের সেই অসহ্য তাপ থেকে নিশ্চয়ই কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। চারপাশে ঠান্ডা বাতাস, বৃষ্টির টাপুর টুপুর সব মিলিয়ে মন ভালো হয়ে যাওয়ার মতো পরিবেশ। কিন্তু এর মাঝেও অনেকেই এখনও এসি চালাচ্ছেন, কারণ বর্ষায় একধরনের স্যাঁতসেঁতে গরমভাব থাকে, যেটা বেশ অস্বস্তিকর। তবে একবার ভেবে দেখেছেন কি এই আরামদায়ক সময়ে এসি চালাতে গিয়ে একটু অসতর্ক হলেই পকেটের ওপর বড় ধাক্কা খেতে হতে পারে?
কেন বর্ষার সময় এসি চালানো হতে পারে ঝুঁকিপূর্ণ?
বৃষ্টির দিনে সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা দেয় বিদ্যুতের ওঠানামা নিয়ে। হঠাৎ করে কারেন্ট চলে যাওয়া, আবার ঝট করে ফিরে আসা এসব খুব সাধারণ বিষয়। কিন্তু এই উঠানামায় এসির কমপ্রেসারে হঠাৎ চাপ পড়ে, যেটা তার ক্ষতির অন্যতম কারণ। কখনও কখনও বিদ্যুৎ ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই এসি চালু হয়ে যায়, ফলে তার ইলেকট্রনিক অংশগুলোতে ধাক্কা লাগে, যেটা দীর্ঘমেয়াদে বড় ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
বাইরের ইউনিটে জল ঢোকার ভয়
যাদের এসির আউটডোর ইউনিট খোলা জায়গায় লাগানো, তারা একটু বাড়তি সতর্ক না হলে বিপদ অনিবার্য। টানা বৃষ্টিতে যদি সরাসরি জল ঢুকে পড়ে, তাহলে শর্ট সার্কিটের আশঙ্কা বাড়ে। পাখা, মোটর বা অন্যান্য যন্ত্রাংশ আটকে যেতে পারে। আবার বর্ষার আর্দ্র পরিবেশ নিজেই ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির জন্য ক্ষতিকর।
ইনভার্টার এসি-ও কি নিরাপদ?
অনেকে ভাবেন ইনভার্টার এসি তো অনেক আধুনিক, এতে কিছু হবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, এই ধরনের এসিও ভোল্টেজের উঠানামায় বেশ সংবেদনশীল। বিশেষ করে হঠাৎ করে ভোল্টেজ বেড়ে গেলে এর সার্কিট ঠিক রাখতে হিমশিম খায়, ফলে ক্ষতির ঝুঁকি থেকেই যায়।
কীভাবে রক্ষা করবেন আপনার এসি?
-
স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করুন: এতে ভোল্টেজের ওঠানামা থেকে এসি বেঁচে যাবে।
-
বারবার বিদ্যুৎ গেলে এসি বন্ধ রাখুন: এতে কমপ্রেসারে অতিরিক্ত চাপ পড়বে না।
-
আউটডোর ইউনিট কভার করুন: জল যাতে ঢুকতে না পারে, সেজন্য শেড বা ওয়াটারপ্রুফ কভার ব্যবহার করুন।
-
ভেজা ইউনিট চালাবেন না: যদি আউটডোর ইউনিট জলমগ্ন হয়ে যায়, তাহলে তা ভালোভাবে শুকিয়ে তবেই চালু করুন।
বৃষ্টির দিনে এসি চালানো নিষেধ নয়, তবে সাবধানতা অবলম্বন করাই বুদ্ধিমানের কাজ। সামান্য কিছু সতর্কতা আপনাকে বড়সড় খরচ থেকে বাঁচাতে পারে, আর আপনার এসিকেও দীর্ঘদিন ভালো রাখতে সাহায্য করবে।