ভারতে তরুণ প্রজন্মের অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি বদলাচ্ছে। ১৮ থেকে ২৮ বছর বয়সী জেনারেশন জেড এখন বিনিয়োগের ব্যাপারে আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন। শেয়ার বাজার কিংবা সিস্টেম্যাটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (SIP) – এই দুটো মাধ্যমেই তারা আগ্রহ দেখাচ্ছে। অন্যদিকে, ২৯ থেকে ৪৩ বছর বয়সী মিলেনিয়ালরা এখনো স্বাস্থ্যবিমা কিংবা টার্ম ইনস্যুরেন্সের মতো সুরক্ষামূলক পলিসির দিকেই বেশি ঝুঁকছেন।
সম্প্রতি পলিসিবাজার নামের একটি বিমা প্ল্যাটফর্ম সারা দেশে একটি জরিপ চালায়। মে থেকে জুন ২০২৫-এর মধ্যে ৪,৬২০ জন অংশগ্রহণকারীর ওপর ভিত্তি করে এই চিত্র উঠে এসেছে।
জেনারেশন জেড ঝুঁকছে SIP ও শেয়ার বাজারের দিকে ১৯ শতাংশ এই প্রজন্ম ইতিমধ্যেই SIP-এ বিনিয়োগ করেছে, যেখানে মিলেনিয়ালদের মধ্যে এই সংখ্যা ১৪ শতাংশ। শেয়ার বাজারেও জেনারেশন জেড সামান্য এগিয়ে ১৫ শতাংশ বনাম ১৩ শতাংশ।
তবে বিমা বিষয়ক সিদ্ধান্তে তারা কিছুটা দ্বিধান্বিত। মাত্র ১৯ শতাংশ জেনারেশন জেড টার্ম ইনস্যুরেন্স নেওয়ার কথা ভাবছে, যেখানে মিলেনিয়ালদের মধ্যে এই সংখ্যা ৩৫ শতাংশ। যদিও স্বাস্থ্যবিমা উভয় প্রজন্মের কাছেই জনপ্রিয় ৬১ শতাংশ জেনারেশন জেড এবং ৬৩ শতাংশ মিলেনিয়াল এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ নিয়েছে বা নিতে আগ্রহী।
একটা বিষয় লক্ষ্যণীয় ৭৮ শতাংশ জেনারেশন জেড মনে করে ৩০ বছরের আগে স্বাস্থ্যবিমা নেওয়া উচিত, সেখানে মিলেনিয়ালদের মধ্যে এমনটা ভাবেন মাত্র ৪৪ শতাংশ। টার্ম ইনস্যুরেন্সের ক্ষেত্রেও ৭২ শতাংশ তরুণ ৩০-এর আগেই এটি নেওয়ার পক্ষপাতী।
তথ্য কোথা থেকে আসছে? এখানে দু’প্রজন্মের মধ্যে সামান্য পার্থক্য। জেনারেশন জেডের ৪৬ শতাংশ বিমা সম্পর্কিত তথ্য ইউটিউবে খোঁজে, এবং অনেকেই জেনারেটিভ এআই-এর সাহায্য নিচ্ছে। মিলেনিয়ালরা একটু পুরনো পথেই থাকছে ৪০ শতাংশ গুগল সার্চে ভরসা রাখে।
জরিপের আরেকটি দিক বেশ চিন্তার। অংশগ্রহণকারীদের অর্ধেকের মতে, স্কুলজীবনে তারা বিমা বা আর্থিক শিক্ষার ছিটেফোঁটাও পায়নি। ৮৫ শতাংশ জেনারেশন জেড এবং ৭৫ শতাংশ মিলেনিয়াল মনে করে, স্কুলেই আর্থিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত।
সব মিলিয়ে বোঝা যায়, তরুণরা ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবছে ঠিকই, তবে বিমা নিয়ে তাদের বোঝাপড়া এখনও অনেকটাই অপরিণত। শেয়ার বাজার আর SIP-এর প্রতি আগ্রহ বাড়ছে, কিন্তু সুরক্ষা মূলক পরিকল্পনায় আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে সময় লাগছে একটা ভারসাম্যের অভাব যেন রয়ে গিয়েই যাচ্ছে।