ক্যালিফোর্নিয়ার এক আদালতের রায়ে গুগলকে দিতে হচ্ছে প্রায় ২,৬৮৮ কোটি টাকা ভারতীয় মুদ্রায় হিসেব করলে এই বিপুল অঙ্কের অর্থ এবার ভাগে পাবেন অন্তত ১ কোটি ৪০ লক্ষ অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী।
মূল অভিযোগ ছিল, ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই গুগল নাকি নিষ্ক্রিয় মোবাইল থেকেও সেলুলার ডেটা সংগ্রহ করেছে। ২০১৯ সালে দায়ের হওয়া একটি ক্লাস অ্যাকশন মামলায় এই অভিযোগ তোলা হয়, আর সম্প্রতি সেই মামলায় আদালত মামলাকারীদের পক্ষেই রায় দিয়েছে।
এই মামলার কেন্দ্রবিন্দু ছিল গুগলের অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম। অভিযোগ, ফোন বন্ধ বা নিষ্ক্রিয় থাকলেও, অজান্তেই ব্যবহারকারীর তথ্য নেটওয়ার্কে পাঠানো হতো, যেগুলো পরে টার্গেটেড বিজ্ঞাপনের মতো পরিষেবায় ব্যবহার করে মুনাফা তুলেছিল গুগল। বলা ভালো, এটা নেহাত ছোটখাটো ভুল নয় বেশ পরিকল্পিত ও ধারাবাহিক তথ্য সংগ্রহের অভিযোগ ছিল তাদের বিরুদ্ধে।
গুগল অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। সংস্থার মুখপাত্র হোসে কাস্টানেদা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। তাঁর দাবি, ব্যবহারকারীরা তাদের পরিষেবার নিয়ম ও গোপনীয়তা নীতিতে সম্মতি জানিয়েছিলেন, এবং এই ডেটা আদান-প্রদান অ্যান্ড্রয়েড ফোনের নিরাপত্তা ও পারফরম্যান্স বজায় রাখার জন্য জরুরি।
তবে মামলাকারীদের আইনজীবী গ্লেন সামার্স এই রায়ে খুশি। তাঁর মতে, এটি গুগলের আচরণের গুরুতর দিক তুলে ধরে এবং স্পষ্ট প্রমাণ করে যে সংস্থাটি ব্যবহারকারীদের আস্থার অপব্যবহার করেছে।
তবে এখানেই শেষ নয়। এই রায় শুধু ক্যালিফোর্নিয়ার ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কিন্তু গোটা আমেরিকার আরও ৪৯টি রাজ্যে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের নিয়ে একটি বৃহত্তর ফেডারেল মামলা চলতে যাচ্ছে, যার শুনানি হতে পারে ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে। সেই মামলায় গুগলের জন্য ক্ষতির অঙ্ক আরও অনেকটাই বাড়তে পারে সেটা বলাই বাহুল্য।
এক কথায়, এই রায় শুধু জরিমানার প্রশ্ন নয় বিশ্বজুড়ে ডেটা গোপনীয়তা নিয়ে প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিল।