স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) সম্প্রতি ২৩ জুন, ২০২৫ তারিখে একটি চিঠিতে রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস (আরকম)-এর ঋণ অ্যাকাউন্টকে "প্রতারণামূলক" বলে ঘোষণা করেছে। এই ঋণের মূল ঘটনা ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে শুরু হয়, যখন কোম্পানিটি বিশাল অঙ্কের ঋণ নেয়। তবে এসবিআই জানাচ্ছে, ডিসেম্বর ২০২৩, মার্চ ২০২৪ এবং সেপ্টেম্বর ২০২৪ এই তিনটি পর্যায়ে তারা আরকমকে নোটিশ পাঠালেও, কোম্পানি সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি। অভিযোগ ছিল, ঋণের শর্ত ভাঙা হয়েছে এবং অর্থের অপব্যবহার হয়েছে।
শেষমেশ ব্যাংকের "প্রতারণা শনাক্তকরণ কমিটি" একধাপ এগিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আরকম এবং এর তৎকালীন পরিচালক অনিল আম্বানির নাম ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংককে (আরবিআই) রিপোর্ট করা হবে।
তাহলে অনিল আম্বানির নাম কেন উঠে এল? কারণ, ঋণ নেওয়ার সময় তিনি আরকমের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। এসবিআই-এর নিয়ম অনুযায়ী, প্রতারণার অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের নাম আরবিআই-এ রিপোর্ট করা বাধ্যতামূলক। ব্যাপারটা আরও চোখে পড়ার মতো এই কারণে যে অনিল হলেন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক মুকেশ আম্বানির ছোট ভাই কিন্তু দুই ভাইয়ের ব্যবসার অবস্থান এখন একেবারে বিপরীত মেরুতে।
এটাই প্রথম ঘটনা নয়। ২০২৪ সালের নভেম্বরে, ক্যনরা ব্যাংকও আরকমের অ্যাকাউন্টকে ‘ফ্রড’ ঘোষণা করেছিল, অভিযোগ ছিল ₹১,০৫০ কোটির ঋণের অপব্যবহার। কিন্তু ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ বম্বে হাইকোর্ট সেই ঘোষণা স্থগিত রাখে, কারণ আরকমকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে ব্যাঙ্ক পদক্ষেপ নিয়েছিল যা আরবিআইয়ের গাইডলাইনের পরিপন্থী।
আরকমের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা ২০১৯ সাল থেকে কর্পোরেট ইনসোলভেন্সি রেজোলিউশন প্রক্রিয়ার (CIRP) আওতায় আছে। আইবিসি-র ধারা ৩২এ অনুযায়ী, যদি জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইব্যুনাল (NCLT) রেজোলিউশন প্ল্যান অনুমোদন করে, তাহলে কোম্পানিকে পূর্ববর্তী প্রতারণা বা ভুলের জন্য আইনি দায়মুক্তি দেওয়া হয়। তাই এসবিআই-এর পদক্ষেপ কতটা টেকসই হবে, তা নিয়ে আরকম এখন আইনি পরামর্শ নিচ্ছে।
এই অবস্থায়, বাজারে আরকমের শেয়ারের দাম ₹১.৫৭ একেবারে পেনি স্টকের স্তরে। গত ছয় মাসে শেয়ারটির দাম ২০ শতাংশের বেশি কমেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এসবিআই-এর পদক্ষেপের তাৎক্ষণিক প্রভাব খুব একটা পড়বে না। শেষ কথা বলবে NCLT সেই দিকেই এখন নজর সবার।