লর্ডসে বুমরাহর তাণ্ডব: স্টোকস-রুট-ওকসকে ফিরিয়ে ইংল্যান্ডকে নাড়িয়ে দিলেন ভারতীয় পেসার

লর্ডসের ঐতিহাসিক মাঠে যখন ভারত-ইংল্যান্ড তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনের সকালটা শুরু হলো, তখন হয়তো কেউ ভাবেনি যে প্রথম সেশনেই দৃশ্যটা এমন বদলে যাবে। কিন্তু জসপ্রীত বুমরাহ সেই আশঙ্কাকেই বাস্তবে রূপ দিলেন। দিনের শুরুতেই বল হাতে নিয়ে ইংল্যান্ডের তিন বড় উইকেট তুলে নিয়ে তিনি ম্যাচের গতিপথই পাল্টে দিলেন। বেন স্টোকসকে ক্লিন বোল্ড করে যেভাবে শুরু, এরপর সেঞ্চুরি হাঁকানো জো রুটকেও ছাঁটাই করে দেন বুমরাহ। এর কিছুক্ষণ পরেই ক্রিস ওকসকে প্যাভিলিয়নের পথে পাঠান ক্যাচ করিয়ে।
জো রুটকে আউট করার সঙ্গে সঙ্গেই বুমরাহ একটা বড় মাইলফলক ছুঁয়ে ফেললেন। রুটকে নিয়ে যেন তাঁর আলাদা হিসেব রয়েছে, এই এক বোলারই তাঁকে টেস্টে ১১ বার আউট করলেন, যা একজন বোলারের পক্ষে রুটকে আউট করার সর্বোচ্চ রেকর্ড। সমান সংখ্যক বার রুটকে আউট করেছেন কেবল অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্স। কিন্তু সব ফর্ম্যাট মিলিয়ে বুমরাহই এখন জো রুটকে সবচেয়ে বেশি, মোট ১৫ বার ফিরিয়ে দেওয়া একমাত্র বোলার। শুধু টেস্টেই নয়, ওডিআইতে তিনবার ও টি-টোয়েন্টিতে একবার রুটকে ফেরত পাঠিয়েছেন তিনি।
গতকাল ইংল্যান্ড তাদের প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেটে ২৫১ রান নিয়ে দিন শেষ করেছিল। আজ সকালে যখন খেলা শুরু হয়, তখনও তারা বড় স্কোরের দিকে তাকিয়ে ছিল। কিন্তু বুমরাহ অন্য পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। দিনের পঞ্চম ওভারে স্টোকস মাত্র ৫ রান যোগ করার পরই তাঁর স্টাম্প উপড়ে দিলেন। ১১০ বল খেলে ৪৪ রান করা স্টোকসের ইনিংসটি আরও বড় হতে পারত, কিন্তু বুমরাহর নিখুঁত ইয়র্কার সেই সম্ভাবনাই গিলে ফেলল।
জো রুট অবশ্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। চার মেরে শতকও পূর্ণ করেন, যা ছিল তাঁর ১৫৬ টেস্ট ম্যাচের ক্যারিয়ারে ৩৭তম এবং ভারতের বিরুদ্ধে ১১তম সেঞ্চুরি। কিন্তু এরপরই যেন বুমরাহ আবার ঝাঁপিয়ে পড়লেন। দুর্দান্ত লেংথে বল করে সরাসরি বোল্ড করে দিলেন রুটকে। ১৯৯ বল খেলে ১০৪ রানের এক চমৎকার ইনিংস ছিল সেটা।
তারপর ক্রিস ওকস, শূন্য রানে তাঁর বিদায়টাও লিখে দেন বুমরাহই। এই এক সেশনে নিজের গতি, নিয়ন্ত্রণ আর ধৈর্য দিয়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন-আপে একটা দারুণ ভাঙন ধরিয়ে দেন তিনি।
এই ম্যাচে বুমরাহ শুধু উইকেটই নেননি, ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের আত্মবিশ্বাসও যেন ছিনিয়ে নিয়েছেন। তাঁর এই স্পেল ভবিষ্যতে হয়তো বারবার ফিরে দেখা হবে। ভারতীয় ফ্যানদের চোখে এটা নিঃসন্দেহে এক ‘ম্যাজিক মর্নিং’।