লর্ডস টেস্টে উত্তেজনার চূড়া, ইংল্যান্ডের জয় আর গিল-ক্রলি দ্বন্দ্ব ঘিরে বিতর্কের ঝড়

ইংল্যান্ডের ঐতিহাসিক লর্ডস ক্রিকেট মাঠ, যাকে ক্রিকেট প্রেমীরা ভালোবেসে ‘ক্রিকেটের মক্কা’ বলেন- সেই মঞ্চেই ঘটল নাটকীয় এক ম্যাচ। ৫ ম্যাচে অ্যান্ডারসন টেস্ট সিরিজে ভারতকে ২২ রানে হারিয়ে ২-১ এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড। কিন্তু শুধুই জয়-পরাজয়ের হিসেব থাকলে হয়তো ম্যাচটা এত আলোচিত হতো না। মাঠে খেলোয়াড়দের আচরণ, উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়, আর একরাশ রাগ যেন ম্যাচকে আরও তীব্র ও ঘটনাবহুল করে তোলে।

পুরো ম্যাচ জুড়ে ভারতীয় ব্যাটারদের স্লেজ করতে দেখা যায় ইংলিশ ফিল্ডারদের। তবে এই ‘মাইন্ড গেমস’-এর সূচনা হয়েছিল একদম তৃতীয় দিনের শেষ দিকে, যখন জ্যাক ক্রলি আর শুভমন গিলের মধ্যে চলছিল টানটান উত্তেজনা। দু’জনের মধ্যে এমন কিছু কথা বিনিময় হয়েছিল, যেগুলো একেবারেই বন্ধুত্বপূর্ণ বলা যাবে না। গিলের উদ্দেশ্যে কিছু আপত্তিকর মন্তব্য ছুড়ে দেন ক্রলি, আর সেখান থেকেই যেন আগুনে ঘি পড়ে।

ঘটনা ছিল খুব সাধারণ, কিন্তু আচরণে লুকিয়ে ছিল অনেক কিছু। তৃতীয় দিনের খেলা শেষ হতে তখনও প্রায় ১৫ মিনিট বাকি। সেই সময় গিল চাচ্ছিলেন অন্তত দু’টি ওভার বল করাতে। কিন্তু ক্রলি তখন সময় নষ্ট করতে থাকেন, যাতে ইংল্যান্ডকে দ্বিতীয় ওভারটি খেলতে না হয়। এটাকে গিল একদম ভালোভাবে নেননি।

লর্ডস টেস্টে হারের পর এই বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলেছেন শুভমন গিল। সংবাদ সম্মেলনে খুব সংযতভাবে জানিয়েছেন, এমন উত্তেজনা খেলারই একটা অঙ্গ। “দেখুন, আপনি মাঠে সবকিছু নিংড়ে দিচ্ছেন শরীর, মন, মানসিক চাপ সব। আর এমন অবস্থায় দুই দলের মধ্যে খানিকটা উত্তাপ থাকাটাই স্বাভাবিক,” বলেন গিল।

তিনি আরও যোগ করেন, “এই উত্তেজনাই খেলাটাকে আরও রোমাঞ্চকর করে তোলে। যখন আবার মুখোমুখি হব, তখন আমরা জানি। এটা কোনোভাবেই সহজ হবে না।”

তবে গিল এটাও স্পষ্ট করে দেন যে, দুই দলের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা আছে। “দুই দলই জিততে চায়, নিজেদের সেরাটা দিতে চায়। কখনো কখনো আবেগ একটু বেশি হয়ে যায়, কিন্তু সেটাই তো টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য।”

এই ম্যাচ শুধু পয়েন্ট টেবিল নয়, মানসিক লড়াইয়েও ভারসাম্য নাড়িয়ে দিয়েছে। সিরিজে এখনো দুটো ম্যাচ বাকি, আর তাতে উত্তেজনা কেবল বাড়বে বলেই মনে করছেন ক্রিকেট ভক্তরা।