AI বনাম মানুষের ট্রেডিং স্কিল: রেডিট ইউজারের সাহসী এক্সপেরিমেন্ট ঘিরে উত্তেজনা, বিতর্ক আর সাসপেন্স

একজন রেডিট ব্যবহারকারী সম্প্রতি এমন এক পরীক্ষা চালিয়েছেন, যা দেখে নেটিজেনদের চোখ কপালে! মাত্র ৪০০ ডলার, অর্থাৎ আনুমানিক ₹৩৪,০০০ ইনভেস্ট করে তিনি বুঝতে চেয়েছিলেন, ChatGPT কি তার নিজের ট্রেডিং দক্ষতাকে হার মানাতে পারে? মজার ছলে একে তিনি নাম দিয়েছেন “YOLO অ্যাডভেঞ্চার”। অবাক করা ব্যাপার হলো, শুরুতেই বাজিমাত। প্রথম দিনেই তার ইনভেস্টমেন্ট দ্বিগুণ হয়ে যায়! হাস্যরসের ছলে তিনি লেখেন, “আমার টাকা যেন ক্রিস জেনারের নতুন রিয়েলিটি শো সাইন করার চেয়েও দ্রুতগতিতে বাড়ল।” কিন্তু এখানেই শেষ নয়, শুরু মাত্র।

চতুর্থ দিন থেকে ব্যাপারটা হয়ে উঠল আরও মজাদার ChatGPT বনাম Grok!

ট্রেডিংয়ের শুরুতে কিছু সফলতার পর, তিনি তার ইনভেস্টমেন্টকে ভাগ করেন দুইভাগে। এক ভাগ চালাবে ChatGPT, অন্য ভাগ Grok। এবার আর শুধু AI টুলকে বলা হয়নি “ট্রেড সাজেস্ট করো”, বরং তাদের সামনে সাজিয়ে দেওয়া হয় গোটা বাজারের বিশাল ডেটা: স্প্রেডশিট, অপশন চেইন, টেকনিক্যাল চার্ট, গ্লোবাল নিউজ, এমনকি গুগল ট্রেন্ডস আর স্যাটেলাইট ইমেজারি পর্যন্ত! নির্দেশ ছিল একদম স্পষ্ট “এই সব ডেটা থেকে এমন ট্রেড বেছে দাও, যাতে আমার সঞ্চয় কয়েক লাখে পৌঁছে যায়।”

দশ দিনের এই পরীক্ষার ফলাফল আরও অবাক করার মতো। মোট ১৮টি ট্রেডের মধ্যে ১৭টি ইতিমধ্যেই সম্পন্ন, আর প্রত্যেকটিতে লাভ! ChatGPT সঠিকভাবে গাইড করেছে ১৩টি ক্ষেত্রে, Grok পেরেছে ৫ বার। তিনি বলেন, “না ChatGPT, না Grok দুজনেই দারুণ করেছে।”

তবে এই ফলাফল যেন খামোখা উত্তেজনায় ডুবিয়ে না দেয়। কারণ তিনি AI-দের খুব কড়া গাইডলাইন দিয়েছিলেন। প্রতি সেশনে সর্বোচ্চ ৫টি ট্রেড সাজেস্ট করতে পারবে। প্রতিটি ট্রেডে লাভের সম্ভাবনা (POP) কমপক্ষে ৬৫% হতে হবে। লোকসান হলে সেটি $৫০০-র বেশি হওয়া চলবে না। একই সেক্টরে দুটির বেশি ট্রেড নয়, এবং প্রতিটি ট্রেডের বিশ্লেষণ দিতে হবে খুব সাধারণ ভাষায়, সর্বোচ্চ ৩০ শব্দে জার্গন একেবারে না।

এই গল্প প্রকাশ্যে আসতেই রেডিটে রীতিমতো হইচই পড়ে গেছে। অনেকে প্রশংসা করেছেন AI-র ট্রেডিং ক্ষমতার, আবার কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন “যদি এত সহজ হতো, তাহলে তো সবাই করত!” কেউ বলেছেন, “এরকম এক্সপেরিমেন্টে ছয় মাস আগে এক ইউজার প্রচুর টাকা হারিয়েছিল।” আরেকজন সঠিক ভাবেই বললেন, “AI তখনই কাজে দেবে যখন আপনাকে নিজেই ট্রেডিংয়ের ভালো বোঝাবুঝি থাকবে। না হলে সবই গ্রীক ভাষা!”

এখন সেই রেডিট ইউজার জানিয়েছেন, তিনি পুরো ছয় মাস ধরে এই পরীক্ষা চালিয়ে যাবেন। তার কথায়, “দশ দিনে AI-র সত্যিকারের দক্ষতা বিচার করা যায় না, কিন্তু আমি এই যাত্রাটা চালিয়ে যেতে আগ্রহী।”

এই গল্প সত্যি হোক বা একটু রঙচঙে, AI-র ট্রেডিংয়ে অংশ নেওয়ার এই প্রচেষ্টা একটা বড় প্রশ্ন তো তুলেই দিয়েছে মানুষের সিদ্ধান্ত নাকি মেশিনের হিসেব, বাজারে কার কথা শেষ পর্যন্ত বেশি কার্যকর প্রমাণিত হবে?