৭০ বছরের রেকর্ড থেকে এক কদম দূরে! অস্ট্রেলিয়ার বিধ্বংসী বোলিংয়ে ২৭ রানে গুঁড়িয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অনুষ্ঠিত তৃতীয় এবং শেষ গোলাপি বল টেস্টে যা ঘটেছে, তা ক্রিকেট ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্যাট কামিন্সের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৭৬ রানে হারিয়ে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে ধবলধোলাই করেছে। কিন্তু আসল চমক লুকিয়ে ছিল শেষ ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পুরো ইনিংসে তুলেছে মাত্র ২৭ রান! হ্যাঁ, ঠিক পড়েছেন। এটা টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দলগত স্কোর। একরকম বলতে গেলে, ১৯৫৫ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নিউজিল্যান্ডের করা ২৬ রানের রেকর্ড প্রায় ছুঁয়েই ফেলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ মুহূর্তে স্যাম কনস্টাসের একটা মিস ফিল্ড না হলে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ঠিক ৭০ বছর আগের সেই লজ্জাজনক রেকর্ডে নাম লেখাত।

এই ম্যাচের শুরুটাও ছিল দোদুল্যমান। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়াও খুব একটা ভাল করতে পারেনি। পুরো দল ২২৫ রানে অলআউট হয়ে যায়, আর মজার ব্যাপার, কেউই হাফ-সেঞ্চুরি করতে পারেননি। স্টিভ স্মিথের ৪৮ আর ক্যামেরুন গ্রীনের ৪৬ ছিল সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ইনিংস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে শামার জোসেফ ঝলক দেখিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন।

তবে পিংক বল হাতে নিয়ে কাংগারুদের বোলিং আক্রমণ তখন থেকেই আগুন ঝরাতে শুরু করে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংস থেমে যায় মাত্র ১৪৩ রানে। কেউই ৪০ রানের গণ্ডিও ছুঁতে পারেনি। স্কট বোল্যান্ড ৩টি, প্যাট কামিন্স ও জোশ হ্যাজলউড ২টি করে উইকেট নেন। প্রথম ইনিংস শেষে অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে যায় ৮২ রানে।

এরপর দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাটিংয়ে তেমন উজ্জ্বল ছিল না অজিরা। ক্যামেরুন গ্রীনের ৪২ রানের ইনিংসের ওপর ভর করে ১২১ রান তোলে দলটি, আর জয় পেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২০৪ রান। কিন্তু এরপর যা হলো, তা যেন দুঃস্বপ্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য। প্রথম ওভারেই মিচেল স্টার্ক তিন উইকেট নিয়ে প্রতিপক্ষের কোমর ভেঙে দেন। পঞ্চম ওভারে আরও দুটো উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেন। তখন স্কোরবোর্ডে মাত্র ৭ রান।

১৪.৩ ওভারেই শেষ হয়ে যায় ক্যারিবিয়ানদের ইনিংস। স্টার্ক ৭.৩ ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে ৬ উইকেট তুলে নিয়ে গোটা ম্যাচে রাজত্ব করেন। বোল্যান্ড পান ৩টি, আর হ্যাজলউড ১টি উইকেট। আশ্চর্যের বিষয়, কামিন্স তখনও বোলিং করতে আসেননি।

এই বিধ্বংসী পারফরম্যান্সের পুরস্কার স্বরূপ, মিচেল স্টার্ক ম্যাচ এবং সিরিজ সেরার খেতাব জিতে নেন। এই টেস্টে তার বল হাতে যা প্রভাব ছিল, তা নিঃসন্দেহে বহুদিন মনে রাখবে ক্রিকেট বিশ্ব।