৩৫ বছরের অপেক্ষা, এবার কি ভাঙবে? লর্ডসে শুভমন গিলের সামনে বিরল ইতিহাস গড়ার সুযোগ

লন্ডনের ঐতিহাসিক লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে চলছে ভারত ও ইংল্যান্ডের পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের তৃতীয় টেস্ট। ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে দ্বিতীয় দিনে ৩৮৭ রানে অলআউট হয়েছে। তবে এই ম্যাচ শুধু স্কোরবোর্ডের জন্য নয়, এক বিরল রেকর্ড ঘিরেও চর্চায়, লর্ডসে কোনো ভারতীয় অধিনায়কের পঞ্চাশ রানের গণ্ডি পার করার ঘটনা ঘটেনি গত ৩৫ বছর ধরে! অবাক লাগলেও সত্যি। এতদিনে সেই খরা কাটাতে পারেন কি না, সেই প্রশ্ন এখন ঘুরছে শুভমন গিলকে ঘিরে।



শেষবার লর্ডসে কোনো ভারতীয় অধিনায়ক ফিফটির গণ্ডি পেরিয়েছিলেন ১৯৯০ সালে। তখন দলের নেতৃত্বে ছিলেন মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন। সেই ম্যাচে তিনি করেছিলেন ১২১ রান, দ্বিতীয় ইনিংসে আরও ৩৭। এরপর বহু অধিনায়ক এসেছেন, গেছেন, কিন্তু কেউই আর সেই মাইলফলকে পৌঁছাতে পারেননি। শুধু শতরান তো দূরের কথা, ফিফটির কাছাকাছিও যেতে পারেননি কেউ।

আজহারের পর ১৯৯৬ সালেও লর্ডসে অধিনায়ক হিসেবে খেলেছিলেন তিনিই। তবে তখন ১৬ রানে থেমেছিলেন। এরপর ২০০২ সালে এলেন সৌরভ গাঙ্গুলি। যিনি লর্ডসেই করেছিলেন তাঁর ঐতিহাসিক টেস্ট ডেবিউ। সেই ম্যাচে করেছিলেন শতরান। কিন্তু অধিনায়ক হয়ে ফিরতে পারলেন না সেই ছন্দে, দুই ইনিংসে যথাক্রমে ৫ ও ০।

২০০৭-এ এলেন 'দ্য ওয়াল' রাহুল দ্রাবিড়। তিনিও ব্যাটে কিছু করে দেখাতে পারেননি। ২ ও ৯ রানে শেষ হয়েছিল তাঁর ইনিংস। তারপর এলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ২০১১ ও ২০১৪, দুবারই টেস্ট খেলেছেন লর্ডসে, কিন্তু রান যেন সাড়া দিচ্ছিল না। দুই টেস্ট মিলিয়ে তাঁর সর্বোচ্চ ছিল ২৮।

এরপর এসেছেন বিরাট কোহলি, যাঁর ব্যাটিং নিয়ে চিরকালই প্রত্যাশা থাকে আকাশচুম্বী। কিন্তু ২০১৮ এবং ২০২১ সালের দুই টেস্টে তিনিও পারলেন না অর্ধশতকের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে, ৪২ ছিল তাঁর সর্বোচ্চ।

এবার পালা শুভমন গিলের। যিনি এই সিরিজে ভারতের অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক করেই বাজিমাত করছেন। হেডিংলিতে প্রথম টেস্টে ১৪৭ রান, এরপর দ্বিতীয় টেস্টে এজবাস্টনে তাঁর ব্যাটে একেবারে ঝড়। প্রথম ইনিংসে ২৬৯, দ্বিতীয় ইনিংসে আরও ১৬১ রান। ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে বিদেশের মাটিতে এমন রান খুব কম জনেরই আছে।

এই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে গিল কি পারবে লর্ডসে সেই বহু প্রতীক্ষিত ৫০ পেরোনো ইনিংসটি খেলতে? প্রশ্নটা এখনও উন্মুক্ত। তবে ফর্ম বলছে, এবার হয়তো ৩৫ বছরের অপেক্ষার পর ইতিহাস লিখতে দেখা যাবে একজন ভারতীয় অধিনায়ককে।

Previous Post Next Post