এজবাস্টনে ইতিহাস লিখল ইংল্যান্ড, ৬ ব্যাটার ‘ডাক’, তবুও ৪০০-র বেশি রান!

এজবাস্টন টেস্টে এক অবিশ্বাস্য কীর্তির সাক্ষী রইল ক্রিকেট বিশ্ব। প্রথম ইনিংসে ভারতের ৫৮৭ রানের বিশাল জবাবে ইংল্যান্ড তুলল ৪০৭ রান। শুনে প্রথমে চমকে উঠতেই পারেন ৪০৭ কি এমন কোনো রেকর্ড? আসল ঘটনা একটু আলাদা।



ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে এই ৪০৭ রান দাঁড় করানোর পথে মাত্র দু’জন ব্যাটার সত্যিকারের লড়াই দিলেন। হ্যারি ব্রুক করলেন ১৫৮, আর তরুণ জেমি স্মিথ খেললেন এক দুর্দান্ত, অপরাজিত ১৮৪ রানের ইনিংস। দু’জনের মধ্যে গড়ে উঠল ৩০৩ রানের এক মহামূল্যবান জুটি। আর বাকিদের অবদান? মিলিয়ে কেবল ১০৫ রান। এখানেই শেষ নয় সবচেয়ে চমকপ্রদ ব্যাপার হলো, দলের ছয়জন ব্যাটার রান খোলার আগেই ফিরে গেলেন। হ্যাঁ, একেবারে শুন্য রানে।

এই পরিসংখ্যান ইংল্যান্ডকে এনে দিল একটা নতুন ইতিহাস। টেস্ট ক্রিকেটে এমন আগে কখনো হয়নি এক দলের ছয় বা তার বেশি ব্যাটার ‘ডাক’ মারার পরও দল ৪০০ ছাড়িয়েছে! অন্য কোনো দেশ এই রকম পরিস্থিতিতে এত রান করতে পারেনি।

এই নজিরের আগে এমন ঘটনা দেখা গিয়েছিল ২০২২ সালে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ছয় ব্যাটার শুন্য রানে ফিরেও বাংলাদেশ তুলেছিল ৩৬৫ রান। ওই ম্যাচে মুশফিকুর রহিম খেলেছিলেন ১৭৫ রানের অসাধারণ ইনিংস, সঙ্গ দিয়েছিলেন লিটন দাস (১৪১)।

এবার ইংল্যান্ড সেই রেকর্ডকে পেছনে ফেলল। শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নয়, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও এর আগে এমন কীর্তি দেখা যায়নি। ভারতীয় ঘরোয়া ক্রিকেটে ছত্তিশগড় ছয় ব্যাটার শুন্যতে ফিরে কেবল ৩১১ রান তুলেছিল কর্ণাটকের বিরুদ্ধে। সেদিক থেকে এই ৪০৭ রানের ইনিংস একটা অভূতপূর্ব ঘটনা।

এবার ম্যাচের কথায় আসা যাক। তৃতীয় দিনের শুরুটা একেবারেই ভাল ছিল না ইংল্যান্ডের। মাত্র ৮৪ রানে অর্ধেক দল প্যাভিলিয়নে। তখন মনে হচ্ছিল, ভারত হয়তো ফলো-অন করিয়ে ম্যাচেই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেবে। কিন্তু হঠাৎ করে ছন্দে ফেরেন ব্রুক ও স্মিথ। দুই ডানহাতি ব্যাটারের কাঁধে ভর দিয়েই ইংল্যান্ড টেনে তোলে ৪০০ পেরোনো স্কোর। শেষমেশ ব্রুক আউট হন ৩৮৭ রানে দলের অবস্থানে, এরপর ইংল্যান্ড অলআউট ৪০৭-এ।

এই ইনিংসের পর ভারত পায় ১৮০ রানের লিড। দিনের শেষে ভারতের স্কোর ১ উইকেটে ৬৪, সামগ্রিক লিড দাঁড়িয়েছে ২৪৪-এ। চতুর্থ দিনে ভারত চাইবে অন্তত আড়াই সেশন ব্যাট করে ইংল্যান্ডের সামনে ৫০০-র কাছাকাছি একটা বিশাল লক্ষ্য দাঁড় করাতে।

সব মিলিয়ে, এই ম্যাচ শুধুই একটা ক্রিকেট লড়াই নয়, রেকর্ড আর অপ্রত্যাশিত নাটকের এক অনন্য মঞ্চ হয়ে উঠেছে।

Previous Post Next Post