দুই ইনিংসে ঝড় তুলে ইতিহাসে নাম লেখালেন শুভমান গিল, ইংল্যান্ড কোচের ধৈর্য ছিন্নভিন্ন

ইংল্যান্ডের মাটিতে চলছে এক তরুণ ভারতীয় ব্যাটারের রাজত্ব। শুভমান গিল, যাঁর ব্যাট যেন থামতেই চাইছে না, আবারও প্রমাণ করে দিলেন কেন তাঁকে ভবিষ্যতের মহাতারকা বলা হচ্ছে। বার্মিংহ্যাম টেস্টের দুই ইনিংসে তিনি যা করলেন, তা শুধুই পরিসংখ্যানের খাতায় নয় প্রতিপক্ষের কোচের ধৈর্যচ্যুতি পর্যন্ত পৌঁছে দিল। প্রথম ইনিংসে ২৬৯ রান করে সবাইকে চমকে দিয়েই দিয়েছিলেন, কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসের ১৬১ রানের ইনিংস যেন একেবারে দৃঢ়ভাবে বুঝিয়ে দিল, ‘এটা শুধু শুরু।’



দ্বিতীয় ইনিংসে গিল খেলেছেন মাত্র ১৬২ বলে, যার মধ্যে ছিল ১৩টি চার আর ৮টি ছক্কা। পুরো ম্যাচে তাঁর সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৪৩০ রান। এমন নজির সাধারণত দেখা যায় না। এর আগে মাত্র একজন ব্যাটার গ্রাহাম গুচ ১৯৯০ সালে ভারতের বিরুদ্ধেই ৪৫৬ রান করেছিলেন এক টেস্টে। গিল এখন রয়েছেন সেই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে।

গিলের এই পারফরম্যান্সে ভারতীয় শিবির যতটা রোমাঞ্চিত, ইংল্যান্ড শিবিরে ঠিক ততটাই হতাশার সুর। ইংল্যান্ডের ব্যাটিং কোচ মার্কাস ট্রেস্কোথিক নিজেই হাল ছেড়ে দিয়েছেন যেন। সাংবাদিকদের তিনি একটু কৌতুকের ছলে বলেই ফেলেন, “আমি ওকে ব্যাট করতে দেখতে দেখতে ক্লান্ত। আমি চাই আমাদের ব্যাটাররা রান করুক, ও নয়! দুটো ম্যাচেই ও অসাধারণ খেলেছে, বিশেষ করে এই টেস্টে প্রথমে ২৫০-এর ওপর রান, তারপর ১৫০-এর বেশি। এটা খুব সাধারণ ব্যাপার নয়, সত্যি বলছি।”

এরপর কোচের মুখে প্রশংসার ছাপও ছিল, “ওর ফিটনেস, মনোযোগ আর স্কিল সব কিছুরই আলাদা করে কুর্নিশ জানাতে হয়। ও নিজের খেলাটাকে খুব ভালো বোঝে, আর সেই মতো ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করে।”

এই সিরিজের প্রথম দুই টেস্টেই গিল করেছেন ৫৮৫ রান। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ মিলিয়ে এত রান এর আগে কেবল একবারই দেখা গেছে ২০০৩ সালে গ্রীম স্মিথ করেছিলেন ৬২১ রান। সে রেকর্ড হয়তো এখনও অটুট, কিন্তু গিলের ফর্ম দেখে মনে হচ্ছে, সেটাও খুব বেশিদিন টিকবে না।

সব মিলিয়ে বলা যায়, এই মুহূর্তে ভারতীয় ক্রিকেটে সবচেয়ে আলোচিত নাম শুভমান গিল। প্রতিপক্ষের চোখে যন্ত্রণা হয়ে দেখা দেওয়া, আবার নিজ দলের কাছে ভরসার প্রতীক হয়ে ওঠা এই দুই চরিত্রই সে অনায়াসে ধারণ করছে। এখন শুধু দেখার, এই ফর্ম কতদূর গড়ায়।

Previous Post Next Post