আইসিসির মাসসেরা নির্বাচিত হলেন এডেন মার্করাম ও হেইলি ম্যাথিউস, নজরে দারুণ পারফরম্যান্স

একটি শক্তিশালী শতরান, দু’টি মূল্যবান উইকেট আর চাপের ম্যাচে নির্ভরযোগ্য পার্টনারশিপ এই সব কিছু মিলিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার এডেন মার্করাম নিজের জায়গা করে নিলেন ক্রিকেটবিশ্বের মাসসেরা খেলোয়াড়ের তালিকায়। জুন মাসের আইসিসি প্লেয়ার অফ দ্য মান্থ খেতাব উঠেছে তাঁর হাতেই। আর নারীদের বিভাগে একই পুরস্কার নিজের চতুর্থবারের মতো জিতে নিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক হেইলি ম্যাথিউস। এই কৃতিত্বে তিনি উঠে এলেন ইতিহাসে, বিশ্বের দ্বিতীয় মহিলা ক্রিকেটার হিসেবে যিনি চারবার এই খেতাব পেলেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫-এর ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন মার্করাম। তাঁর এই ইনিংসটি এসেছিল ২০৭টি বল খেলে, আর তেম্বা বাভুমার সঙ্গে গড়া ১৪৭ রানের জুটি কার্যত দক্ষিণ আফ্রিকার ভাগ্য ঘুরিয়ে দেয়। শুধু ব্যাটেই নয়, বল হাতেও ছিলেন কার্যকর পকেটস্থ করেছিলেন দুইটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। এই নিখুঁত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে তিনি পেছনে ফেলে দেন দেশের তারকা পেসার কাগিসো রাবাদা এবং শ্রীলঙ্কার ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কাকে।
এই ম্যাচটি শুধু পরিসংখ্যান নয়, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ইতিহাসে একটি চিরস্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে থাকবে। দীর্ঘদিন ‘চোকার্স’ তকমা নিয়ে চলা দলটি এবার যেন নিজেদের প্রমাণ করল বিশ্বমঞ্চে চাপের মুখেও তারা লড়াই করতে জানে। মার্করামের ইনিংস সেই সাহসিকতার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে, নারীদের বিভাগে হেইলি ম্যাথিউস যেন ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে তিনটি ওয়ানডেতে করেছেন ১০৪ রান, যার মধ্যে রয়েছে এক অর্ধশতক। বল হাতে নিয়েছেন চারটি উইকেটও। এরপর টি-২০ সিরিজেও ছিলেন সমান ছন্দে মোট ১৪৭ রান ও দুই উইকেট নিয়ে হয়েছেন সিরিজ সেরার পুরস্কার প্রাপক। এর আগে ২০২১ সালের নভেম্বর, ২০২৩-এর অক্টোবর এবং ২০২৪-এর এপ্রিল মাসে মাসসেরা নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
এবার তাজমিন ব্রিটস ও এফি ফ্লেচারকে পেছনে ফেলে এই স্বীকৃতি পেলেন। অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার অ্যাশলে গার্ডনারের পরে তিনিই দ্বিতীয় নারী যিনি চারবার এই পুরস্কার অর্জন করলেন। এটা নিঃসন্দেহে তাঁর জন্য বড় স্বীকৃতি এবং বিশ্ব ক্রিকেটের জন্য এক নতুন বার্তা। সময়ের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার হিসেবে তাঁর জায়গা এখন অনেকটাই পোক্ত।
এই দুই তারকার পারফরম্যান্স শুধু মাসসেরা হিসেবেই নয়, ক্রিকেটে নেতৃত্ব, ধারাবাহিকতা আর প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রাখার এক অপূর্ব উদাহরণ হয়ে থাকল।