সিরাজের ছয় উইকেটের ম্যাজিক: বুমরাহহীন ভারতকে ম্যাচে এগিয়ে দিলেন ‘অবিশ্বাস্য’ পারফরম্যান্সে

জসপ্রীত বুমরাহ নেই, ফলে ভারতের পেস আক্রমণের দায়িত্ব গিয়ে পড়েছে মোহাম্মদ সিরাজের কাঁধে। আর সেই দায়িত্বটা তিনি শুধু পালনই করলেন না, বরং এমন একটা পারফরম্যান্স দিলেন, যা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিল। দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৭০ রানে ৬ উইকেট নিয়ে একাই ম্যাচে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনলেন এই হায়দরাবাদি পেসার।

দিনের খেলা শেষে সিরাজ জানালেন, এই মুহূর্তটার জন্য তিনি অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করছিলেন। তার কথায়, “সত্যি বলতে, এটা আমার জন্য একেবারে অবিশ্বাস্য। দীর্ঘদিন ধরে ভালো বল করলেও উইকেট আসছিল না। আজ এখানে ছয় উইকেট পাওয়া সত্যিই খুব স্পেশাল।”

দিনের দ্বিতীয় ওভারেই পরপর দুই উইকেট তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডকে ৮৪ রানে পাঁচ উইকেটে ঠেলে দেন সিরাজ। যদিও এরপর হ্যারি ব্রুক (১৫৮) ও জেমি স্মিথ (নট আউট ১৮৪) দারুণ একটা জবাব দেন। দু’জনের ব্যাট থেকে আসে ৩০৩ রানের বিশাল পার্টনারশিপ, যা ভারতকে চাপেও ফেলে। তবে শেষপর্যন্ত সিরাজের দাপটেই ইংল্যান্ড থামে ৪০৭ রানে ভারতের ৫৮৭ রানের জবাবে।

এদিন স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল, উইকেট খুব একটা সহায়তা দিচ্ছিল না পেসারদের। সিরাজ নিজেও সেটা মেনে নিয়েছেন, “পিচটা বেশ স্লো ছিল। তাই খুব বেশি কিছু করার ছিল না। আমার ফোকাস ছিল একটা জায়গায় ধারাবাহিকভাবে বল রেখে ব্যাটারদের ওপর চাপ তৈরি করার। রান যেন না আসে, সেটাই মাথায় ছিল।”

বুমরাহর অনুপস্থিতিতে সিরাজের নেতৃত্বে খেলছিল এক নবীন পেস ইউনিট সঙ্গে ছিলেন আকাশ দীপ ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। দু’জনেরই অভিজ্ঞতা খুব কম। সিরাজ সে কথা মাথায় রেখেই বলছিলেন, “আকাশ দীপ হয়তো তৃতীয় বা চতুর্থ ম্যাচ খেলছে, প্রসিদ্ধের ক্ষেত্রেও একই কথা। তাই আমি চাইছিলাম ওদের পাশে দাঁড়াতে, একসঙ্গে চাপ তৈরি করতে। কখনও কখনও নতুন কিছু ট্রাই করতে ইচ্ছে করছিল, কিন্তু নিজেকে ধরে রাখলাম, কারণ ধারাবাহিকতাই সবচেয়ে জরুরি।”

আর যখন প্রশ্ন উঠল বুমরাহর জায়গায় এসে এমন দাপটের ব্যাখ্যা কী? হালকা হেসে সিরাজের উত্তর, “দায়িত্ব নিতে আমার ভালো লাগে, চ্যালেঞ্জ নিতে আমার মজা লাগে।”

সত্যি বলতে, এই ম্যাচের এই মুহূর্তে সিরাজ যা করলেন, তা নিঃসন্দেহে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের বড় স্বস্তি। এখন দেখার, শেষ দুই দিনে এই ছন্দ ধরে রাখতে পারেন কি না ভারতের বোলিং ইউনিট।